স্টাফ রিপোর্টার

মালয়েশিয়ায় একটি কারখানায় কর্মরত অবস্থায় দৃর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কয়রা গ্রামের কবির হোসেন। ১৬ ডিসেম্বর রাতে মালয়েশিয়ার কে সেল কারখানার ২ নম্বর গেটে কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্বৃত্তদের হাতে তিনি নিহত হন। ওইদিন রাত ৩টায় কবিরের বাড়িতে মৃত্যুর সংবাদ পৌছিলে পুরো পরিবারসহ গ্রামে সেমে আসে শোকের পরিবেশ। বর্তমানে কবিরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম ।
পরিবার স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে কাজের জন্য মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান কবির হোসেন। এরপর মালয়েশিয়ায় একটি কারখানার গার্ড হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২ বছর আগে ছুটিতে বাড়ি আসেন কবির। সামনে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে দেশে ফেরার কথা ছিল তার। মালয়েশিয়ার কে সেল কারখানার দ্বিতীয় গেটে গার্ডের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় প্রবাসীর। এরপর রাতে কারখানায় দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন তিনি। রাত ৩টার দিকে পরিবারের কাছে মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছায়।
মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় এলাকার আত্মীয়-স্বজন খবর পেয়ে নিহতের বাড়িতে ছুটে আসেন। তাদের আহাজারি আর কান্নায় স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা।
নিহত কবির হোসেন নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কয়রাগ্রামের বাসিন্দা। পরিবারে স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে তার।

নিহত কবিরের একমাত্র ছেলে সোহান হোসেন বলেন, আমার বাবার সামনের মাসে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। অনেক আশায় ছিলাম আমরা, বাবা বাড়িতে আসবে। কিন্তু সেই আনন্দ শেষ হয়ে গেল। কেন আমার বাবাকে খুন করা হলো, আমি তার বিচার চাই। আমার বাবার লাশ যেন দ্রুত আমাদের কাছে পাঠানো হয় সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, আমার স্বামীর কত স্বপ্ন ছিল সে দেশে ফিরে কত কিছু করার কথা। গত রাত রাত ৯টায় আমাকে ফোন করেন, আমার বুকে ব্যথায় কথা বলতে পারিনি। ব্যথা কমলে ফোন দিতে বলেছিল আমার স্বামী। পরে কল দিলে আর পাইনি। মৃত্যুর আগে শেষ কথাটাও তার সাথে বলতে পারলাম না। এমনই হতভাগা আমি বলেই ডুকরে কেদে উঠেন তিনি। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার স্বামীকে কে মারল, এমন শক্র কে? তার বিচার চাই।
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারের পাশে থাকবে।
ছবি ক্যাপশান-
