স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরে জাল ডকুমেন্টস তৈরি করে করে আদালতে পেশ করার দায়ে নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোঃ সাইদুল ইসলামসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সিংড়া আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ। সিংড়া আমলী আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রাজু আহমেদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবী আসামিগণ পরস্পর যোগসাজসের মাধ্যমে জাল ডকুমেন্ট সৃজন করে সিংড়াা আমলী আদালতে খাঁটি হিসেবে দাখিল করেন। একারণে আদালত বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন নাটোর শহরের বড় হরিশপুর এলাকার বাসিন্দা ও নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোঃ সাইদুল ইসলাম (সাঈ সিংড়া উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের মোঃ মুনির উদ্দিন ফকির ফকিরের ছেলে, মো: কামরুজ্জামান,একই গ্রামের মোঃ মমতাজ ফকিরের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সিংডার স্ট্যাম্প ভেন্ডর মোঃ মোনায়েম ।
ওই মামলায় দরখাস্তকারী মোঃ মামুন সোনার একটি নালিশী দরখাস্ত দাখিল করে বলেন যে, আসামি মোঃ কামরুজ্জামান, মোছাঃ তুহিনা খাতুন ও মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তার নিকট জমি ক্রয় করে রেজিস্ট্রি করে নিয়ে আট লাখ টাকা বাকী রাখেন এবং ৩০০ টাকা মূলের ৩ টি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ৩ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের চুক্তিনামা সম্পাদন করে দেয় এবং ০৩ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার অঙ্গীকার করেন। পরে সেই টাকা পরিশোধ না করলে মামুন সোনার আসামিদের বিরুদ্ধে সিংড়া আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এরপর আসামিগণ গত ২২ জানুয়ারি পরস্পর যোগসাজসে ১০০ টাকা মূল্যের ৩টি স্ট্যাম্পে মামুন সোনারের স্বাক্ষর জাল করে এবং তাদের দলিল হতে তার ছবি সংগ্রহ করে নাটোর নোটারী পাবলিকের কাছে জাল আপোসনামা তৈরি করে সিংড়া আমলী আদালতে জমা দিয়ে আসামীদের জামিনের আদেশ প্রাপ্ত হয়।
পরে মামুন সোনার আদালতে এসে নালিশ করেন তিনি কোন আপেষনামা করেননি। আসামীরা তার স্বাক্ষর জাল করে আদালতের সাথে প্রতারণা করে জামিন নিয়েছে।
এরপর আদালতের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এটা প্রতীয়মান হয় যে, আসামী মোঃ কামরুজ্জামান ও মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পরস্পর যোগসাজসের মাধ্যমে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে বাদীর অনুরুপ স্বাক্ষর জাল করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে একটি এফিডেভিট সম্পাদন করে।উক্ত এফিডেভিটে ঘোষণাকারী প্রথম পক্ষ কামরুজ্জামান ও মামুন সোনারকে সনাক্ত করেন নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোঃ সাইদুল ইসলাম।
এছাড়াও এফিডেভিটে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প ৩ টিতে সিংড়া থানার স্ট্যাম্প ভেন্ডর মোঃ মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত হলেও ট্রেজারিতে তা লিপিবদ্ধ নাই। সিংড়ার স্ট্যাম্প ভেন্ডর মোঃ মোনায়েম আসামিদের সাথে যোগসাজশ করে ওই স্ট্যাম্প ৩ টি সরবরাহ করেন।
সিংড়া আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রাজু আহমেদ বলেন, মামলাটি বিচারের জন্য অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামুন সোনারের আইনজীবী এডভোকেট সাইদুর রহমান সৈকত বলেন, জালিয়তি করে আসামী মোঃ কামরুজ্জামান ও মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পরস্পর যোগসাজসের মাধ্যমে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে মামুনের অনুরুপ স্বাক্ষর জাল করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে একটি এফিডেভিট সম্পাদন করে আদালত থেকে জামিন নেয়।
পরে আমরা বিষয়টি আদালতকে জানালে আদালত তদন্ত করে জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণ পান। পরে আদালত মামলা করেন। আইনজীবীর জালিয়াতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। আদালতের কাছে জালিয়াতি প্রমাণ হওয়ায় আইনজীবী আসামি হয়েছেন।