স্টাফ রিপোর্টার
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন , আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেছিলেন বাংলাদেশের মুসলিম,হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই বাংলাদেশী। বাংলাদেশী হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব আপনাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। আপনারা বলেছেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার । এটা সবার মাথায় রাখতে হবে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যদি পরাজিত শক্তি কোন ষড়যন্ত্র করে বিএনপি নেতাকর্মীরা তা রুখে দিবে। তাছাড়া আমাদের নেতা তারেক রহমান আপনাদের পাশে থাকা নির্দেশ দিয়েছেন । আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জালমলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বিএনপি। প্রতিটি ওয়ার্ডে শান্তি শৃংখলা রক্ষা বিএনপির নেতা কর্মীরা সক্রিয় থাকবে। এছাড়া পূজা মন্ডপ গুলোতে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য ব্যানার দেওয়া হবে এবং সেই ব্যানারে হেল্প লাইন নাম্বার দেওয়া হবে। আপনাদের যেকোন সমস্যা ফোন পাওয়া মাত্র আমরা ইনশা আল্লাহ সমাধান করে দেব। তিনি আজ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে আলাইপুর বিএনপির কার্যালয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নাটোর পৌর পূজা পরিষদ আয়োজিত নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দুলু বলেন, আমি যখন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে নাটোরে মাটিতে পা দিয়েছিলাম ,তখন বলেছিলাম কে আমাকে ভোট দিল কে দিল না এটা বিষয় না। আমি সকল মানুষের। আমি এটাও বলেছিলাম যদি কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর নির্যাতন হয় তার যদি বিচার করতে না পারি তাহলে আমি শাড়ি পরে ঘড়ে উঠে যাব। আমি যে পাঁচ বছর মন্ত্রী ছিলাম নাটোরের হিন্দু ভাইয়েরা সব থেকে ভালো অবস্থানে ছিলেন। ৫ ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পালিয়ে যাওয়ার পর প্রশাসনের অনুরোধে আমি নাটোরে এসেছিলাম। আপনাদের নিয়ে সভা করেছি। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং সহযোগিতা করব।
তিনি আরো বলেন , আমরা লক্ষ্য করি, যখন কোন পূজা বা হিন্দুদের উৎসব আসে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয় জঙ্গি হামলা হবে। আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন কিন্তু এটা হয় না । অথচ তাদের সময়ে হিন্দু সহ সংখ্যা লঘুদের ওপর হামলা হয় ভাঙচুর হয়, ।তিনি বলেন বাংলাদেশে কোন জঙ্গি আছে নাকি। এটা এক ধরনের প্রোপাগান্ডা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলের উল্লেখ করে বলেন, নাটোরের কারু কাঞ্চন জুয়েলার্সে ডাকাতি হয়েছে ,যমুনা জুয়েলার্সে সন্ধ্যা বেলায় হামলা ও ডাকাতি হয়েছে, লক্ষীনারায়নপুরে ডাকাতি ও হামলা হয়েছে, দেব ব্রাদার্সের মালিক পালিয়ে এসেছেন বাধ্য হয়ে। ডিসি অফিসের কর্মচারী বনানীতে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে,। আপনারা কি বিশ্বাস করেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়া কাপুড়িয়া পট্টি ,লালবাজারের মত এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। অথচ বিএনপির শাসনামলে কোন নেতা কর্মী এ ধরনের ঘটনার সাথে কখনোই জড়িত ছিল না। আপনারা যদি বলতে পারেন আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। বরং আমি আপনাদের বিভিন্ন উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি।
দুলু বলেন , আমার বাবা নাসির উদ্দিন তালুকদার সাহেব ১৯৬২ সালে সম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় আপনাদের পাহারা দিয়ে রক্ষা করেছেন। আমি জানতাম না, বিশিষ্ট ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্যের মা আমাকে ফোন করে বলেছেন এসব কথা। আমার বাবা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন। দুলু বলেন , আওয়ামী লীগের ভিতরে একমাত্র সংকর গোবিন্দ চৌধুরী কে আমি নেতা হিসেবে মানি। তিনি সত্যিকার অর্থেই একজন নেতা ছিলেন। কিন্তু সংকর গোবিন্দ চৌধুরী মৃত্যুর পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা যার উপস্থিত আছেন আমি জিজ্ঞেস করছি আপনারা বলেন যারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছিল ,তাদের কাছে আপনাদেরমত শিক্ষিত কোন ব্যক্তি তাদের সঙ্গে কথা বলার মত কোন পরিবেশ ছিল কিনা।
দুলু বলেন , নাটোরের যা কিছু উন্নয়ন বিএনপির সময় হয়েছে। নাটোর হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, বাইপাস সবকিছু আমাদের সময় করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি বিএনপি ক্ষমতায় এলে নাটোরে গ্যাস অবশ্যই আনা হবে। নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা এমদাদুল হক আল মামুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক রহিম নেওয়াজ, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক সাইফুল ইসলাম আফতাব,মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, জেলা বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, নাসিম উদ্দিন নাসিম, সাবেক পৌর মেয়র শেখ এমদাদুল হক আল মামুন, পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খগেন্দ্রনাথ রায়,বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সস্পাদক সুব্রত সরকার, যুব দলের সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, সহ দলের নেতা কর্মিরা।
। মত বিনিময় সভা শেষে নাটোর পৌর সভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা এমদাদুল হক আল মামুন প্রতিটি পুজা মন্ডপে অর্থনেতিক সহযোগিতা করেন।