ধান দিয়ে গড়া দুর্গা প্রতিমা,ছড়াচ্ছে সোনালী আভা

  • রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
ধান দিয়ে গড়া দুর্গা প্রতিমা,ছড়াচ্ছে সোনালী আভা #সংবাদ শৈলী

স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরে একটি একটি করে ধান দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অপূর্ব কারুকার্যময় দুর্গা প্রতিমা । সোনালী রঙের কারুকার্যময় প্রতিমা দেখে বিষ্মিত হচ্ছে দর্শক ও সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা শারদ উৎসব উপলক্ষে নাটোর শহরের লাল বাজারে রবি সুষম সংঘ এই দুর্গা প্রতিমা করিয়েছেন একই এলাকার প্রতিমা শিল্পী বিশ্বজিৎ পালকে দিয়ে। বিশ্বজিৎ পাল বলেন প্রতিমটির কাজ শেষ করতে চার জন শিল্পীর এক মাসের বেশি সময় লেগেছে । এই প্রতিমার বৈশিষ্ঠ হচ্ছে কাঠ ও বাশ দিয়ে ফ্রেম তৈরি ও মাটির কাজ শেষ করার পরে প্রতিমার শরীরে বিশেষভাবে ছোট ছোট ধান বসানো হয়েছে ফুলের মত করে। বিশ্বজিৎ পাল আরও বলেন প্রতিমার আদি রূপ ফুটিয়ে তুলতে প্রায় পঞ্চাশ কেজি মতো ধান লেগেছে। মন্ডপে দুর্গা , কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী ,লক্ষ্মী ,মহিষাসুর প্রতিমাগুলো শুকিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে মাটি নরম থাকতে প্রতিমা জুড়ে ধান বসিয়ে দেওয়া হয়। ধান এমনভাবে বসানো হয়েছে যাতে দেখলে মনে হয় যেন সোনা দিয়ে মোড়ানো। প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘একমাসের বেশি সময় ধরে চেষ্টার ফসল হিসেবে ৫০ কেজি ছোট ছোট ধান ব্যবহার করা হয়েছে।
রবি সুতম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় বলেন, “রবি সুতম সংঘ প্রতিবছরই নিত্য নতুন দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরে আমরা ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করি। ধান দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করাটা খুব সহজ কাজ নয়। আমরা প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পালের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করে দিতে সম্মতি দেন। প্রতিমাশিল্পী একটি করে ধান সুনিপুণভাবে থরে থরে সাজিয়ে প্রতিমাকে সুন্দর করে তুলেছেন।” ‘প্রতিমাকে ভিন্ন আদলে তুলে ধরার প্রয়াসে ধান ব্যবহার করা হয়েছে। যেন সোনালি আভা ফুটে ওঠে। এছাড়া ধান গ্রামবাংলার মানুষের কাছে সমৃদ্ধি ও ঐশ্বর্যের স্মারকও বটে। ধান দিয়ে জেলাতেই প্রথম এখানে প্রতিমা তৈরি হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, বহু বছর আগে স্বর্গীয় নিমাই চন্দ্র পাল নাটোর শহরের লালবাজারে প্রতিমা তৈরির একটি কারখানা গড়ে তুলেন। তাঁর হাতের তৈরি প্রতিমার বেশ কদর ছিল। নিখুঁত হাতে চমৎকার ভাবে প্রতিটি প্রতিমাকে শিল্পকর্মের মাধ্যমে সাজিয়ে তুলতেন তিনি। ফলে নাটোর জেলার বাহিরেও তাঁর হাতের তৈরির বিভিন্ন দেবীর প্রতিমার বেশ চাহিদা ছিল।তাঁর মৃত্যুর পর অল্প পরিসরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেন তাঁর ছেলে বিশ্বজিৎ পাল এবং ছোট ভাই গোপাল চন্দ্র পাল।
নাটোর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খগেন্দ্রনাথ রায় বলেন, জেলায় এবার ৩৫৪ টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপিত হচ্ছে। গত বছরের থেকে এবার ৩৮টি দুর্গাপূজা কম হচ্ছে। “নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকার কারণে এবছর পূজা কম হচ্ছে। তবে নাটোরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাছুদুর রহমান বলেন, “পূজা মণ্ডপের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পূজা মণ্ডবে নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ এবং আনসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। এছাড়াও পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক নিরাপত্তার কাজের নিয়োজিত থাকবে।”
আগামী মঙ্গলবার দেবী দুর্গার বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর ১৩ অক্টোবর রোববার বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
COPYRIGHT 2023 sangbadshoily, ALL RIGHT RESERVED
Site Customized By NewsTech.Com