স্টাফ রিপোর্টার
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র অর্ডিনারী সিম্যাান(ওএস) জয় মাহামুদের জিম্মিও খবরে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক ও ক্রুদের মধ্যে রয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে জয় মাহমুদ। মঙ্গলবার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর সে খবর ছড়িয়ে পড়লে জয়ের বৃদ্ধ বাবা মা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একমাত্র ছেলেন জিম্মিদশার কথা শোনার পর থেকে বাবা জিয়াউর রহমান ও মা আবিদা বেগমের চোখে ঘুম নেই। তারা চান তাদের সন্তানসহ জাহাজের সবাইকে উদ্ধারে দ্রæত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ। জয় মাহমুদ গত বছরের ২৯ নভেম্বর জাহাজটিতে যোগদান করেছিলেন।জয়ের মা অবিদা বেগম ক্ষণে ক্ষণে ক্রন্দন করছেন আর বলছেন আমার ছেলের চাকুরী চাই না। তোমরা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দাও।
বুধবার সরজমিনে জয়ের সালাইনগরেরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়ি ও আশে পাশের বাড়িরগুলোর লোকজনদের চেহারা থমথমে। জয়ে মা থেকে থেকে ক্রন্দন করে উঠছেন।জয়ের বাবা তেমন কথা বরছেন না।
জানা যায়, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ায় জাহাজটিকে জিম্মি করে জলদস্যুরা। জিম্মি করা হয় জয়সহ জাহাজের ২৩ জনকে। জিম্মিদের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জন, নোয়াখালির দুজন রয়েছেন। এ ছাড়া জাহাজটিতে নাটোর, নওগাঁ, ফরিদপুর, ফেনী, লক্ষীপুর, বরিশাল, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও খুলনার নাবিক রয়েছেন।
জয়ের চাচাতো ভাই মো. মারুফ আলী বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে ভাই ফোন দিয়ে বলে ‘তাদের জাহাজ জলদস্যুরা আক্রমণ করেছে। আমার সঙ্গে আর কথা নাও হতে পারে। বাড়িতে কাউকে কিছু বলিস না’। ফোন নিয়ে নিতে পারে বলে ফোন কেটে দেয়।
পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে মেসেজ করে বলে ‘ফোন জমা নিল। ‘আব্বু-আম্মুকে কিছু বলো না, । আব্বু আম্মুকে সান্ত¡না দিও। আর কথা হবে না।’আমার জন্য দোয়া করো। এর পর থেকে ফোনে তাকে আর পাচ্ছি না।
জয়ের মা আরিফা বেগম বলেন, ছেলে জয় তাকে ফোনে শুধু বলেছে ‘মা আমার ফোনে এমবি থাকবে না, কথা নাও হতে পারে। আমার সঙ্গে হয়তো এক-দুই মাস কথা নাও হতে পারে। ঈদে শপিংসহ যা কেনা লাগে তোমরা কিনে নিও। এই কথা বলার সংগে সংগে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন , আমার ছেলের চাকুরী চাই না। আমার বুকের ধনরে আপনারা আমার কাছে ফিরিয়ে দেন। ’
বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলেসহ জিম্মি সব নাবিককে দ্রæত উদ্ধার করে দেশে ফেরত আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।