সংবাদ শৈলী রিপোর্ট
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন ,‘শনিবার ঢাকায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এটাই উপযুক্ত জায়গা। এখানে আমরা একাধিকবার শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। এই মহাসমাবেশ হবে নজিরবিহীন, ঐতিহাসিক। সারা দেশের গণতন্ত্রহারা বঞ্চিত মানুষ ঢাকার দিকে ছুটে আসার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়েছে। যদিও সরকারি জুলুম-নির্যাতন, দমন-পীড়নের কোনো কমতি নেই। অব্যাহত গণগ্রেফতারের মধ্যেও দীপ্ত অঙ্গীকারে তারা ঢাকার দিকে ছুটে আসছে।’
বুধবার (২৫ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী আরও বলেণ, ‘সরকারের মন্ত্রী ও পুলিশ কর্মকর্তারা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে নিয়ে ঢাকা মহানগরকে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের জায়গা বানাতে চাচ্ছে। রাজধানীর প্রবেশ মুখগুলোতে র্যাবের চৌকি বসিয়ে তল্লাশির নামে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ তল্লাশির নামে গ্রেফতার ও নানা কায়দায় হয়রানি এবং পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ঘোষিত পরবর্তী কর্মসূচি সফল করার জন্য দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ২৮ অক্টোবরের পরে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন।’
মহাসমাবেশ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘মহানগর পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, যেখানেই অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে। পুলিশ কর্মকর্তাদের এ রকমের বক্তব্যে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশের জনগণ এখন পরাধীন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড, মত প্রকাশ- সবকিছুই এখন পুলিশের ছাড়পত্রের ওপর নির্ভর করবে!’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধীদলের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের ক্রোধ একই রকমভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। তারা মনে করেন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আক্ষরিক অর্থেই লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। সরকারের মন্ত্রীদের সুরে সুর মিলিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকির মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতাদের হুমকি, নির্মূলের হুমকি, হেফাজতকে দমনের মতো করে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে হুমকি এক উপসংহারহীন পরিণতির সৃষ্টিরই ইঙ্গিত করা হচ্ছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তারা তো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, তারা তো মালিক নন। তারা কীভাবে নির্ধারণ করে দেয় রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ কোথায় হবে? বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, যাদের কয়েকবার দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই দলটি কি জানে না যে, সমাবেশ কোথায় করতে হয়? পুলিশ কর্মকর্তাদের এ ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশে বাধা দান ও সরাসরি হস্তক্ষেপ।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।