সংবাদ শৈলী ডেস্ক
ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। চূড়ান্ত ঘোষণা না এলেও শুক্রবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলোতে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের লাগাতার বৈঠকের খবর দেওয়া হয়। এ ছাড়া উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণে সরে যেতে বলায় মনে করা হচ্ছে, হামাসকে ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েল অচিরেই স্থল অভিযান চালাতে পারে।
শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় স্থলপথে সামরিক অভিযান চালালে তা কেমন হবে, তা-ই কয়েক দিন ধরে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ গাজা উপত্যকা অঞ্চলটি ঘনবসতিপূর্ণ। ২১ লাখেরও বেশি মানুষ সেখানে বাস করে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাজনীতিক ও কূটনীতিকরা ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে বেসামরিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতি তত বাড়বে।
এতে ইসরায়েলের প্রতি সংহতির বার্তা দুর্বল হতে থাকবে। আবার ইসরায়েলি সেনা ও সে দেশের জিম্মিদের হতাহতের আশঙ্কার বিষয়টিও রয়েছে।
নির্দেশের অপেক্ষা
সামরিক অভিযানের জন্য ইসরায়েল এরই মধ্যে সীমান্ত বরাবর সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। এক লাখ ৬০ হাজারের মতো প্রস্তুত সেনার সঙ্গে তিন লাখের মতো সংরক্ষিত সেনাকেও সক্রিয় করা হয়েছে।
গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলের সতর্কতা তাদের সামরিক অভিযানের পরবর্তী ধাপ আসন্ন বলে ইঙ্গিত দেয়।
ইসরায়েলি সেনারা হামাসকে মোকাবেলা করতে উদগ্রীব। শুকি নামের একজন চাকরি ছেড়ে সরাসরি চলে এসেছেন যুদ্ধ করতে। যুদ্ধের ব্যাপারে তার মন্তব্য, ‘আমরা জীবন ভালোবাসি। তাই বেঁচে থাকার জন্যই লড়তে চাই।
’
সমর সজ্জায় প্রস্তুত
ইসরায়েল এরই মধ্যে হামাসের অবকাঠামো ও অস্ত্রাগার ধ্বংস করতে লাগাতার বিমান হামলা চালাচ্ছে। গত ছয় দিন তারা গাজায় ছয় হাজার বোমা ফেলেছে। এতে ব্যবহৃত হয়েছে চার হাজার টন বিস্ফোরক। গাজায় লড়তে হলে ইসরায়েলি সেনাদের জন্য অপেক্ষা করছে দুর্ভেদ্য সুড়ঙ্গ ও ঘিঞ্জি ভবন এবং হামাসের পাল্টা আক্রমণ।
ইসরায়েলি সামরিক সক্ষমতা নিয়ে বেশ কয়েকটি বইয়ের লেখক ও দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা জেরুজালেম পোস্টের সাবেক সম্পাদক ইয়াকভ কাত্জ বলেন, সামরিক বাহিনীর বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ব্রিগেডকে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সঙ্গে প্রকৌশলীদের নেতৃত্বে সাঁজোয়া বুলডোজারও থাকবে।
জিম্মিদের নিয়ে চিন্তা
ইসরায়েল স্থল অভিযানের জন্য প্রস্তুত হলেও জিম্মিদের নিয়ে চিন্তায় রয়েছে তারা। মেজর জেনারেল গিলেদ একসময় ইসরায়েলি জিম্মি মুক্ত করার আলোচনার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। হামাসের হাতে ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আটক সেনা গিলাদ শালিতের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন তিনি। এ বিষয়ে গিলেদ বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা যদি বিশেষ কিছু না করি, তাহলে অভিযানে আরো জটিল কিছু সমস্যার মধ্যে পড়তে পারি।’
তবে ইসরায়েলি এই জেনারেল এ-ও বলেন, ‘জিম্মিরা কোনো পদক্ষেপের অন্তরায় হতে পারবে না। হামাসকে শেষ করতে হলে যুদ্ধ করতেই হবে।’
সূত্র : বিবিসি