স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ষড়যন্ত্রকারী কলেজ ছাত্রী সাদিয়া নওশিন অন্তরার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গালিমপুর গ্রামবাসী। কালেজ পড়–য়া ছাত্র কৌশিক আহমেদ এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও রাজিকুল ইসলাম পাপ্পুর (পুলিশ সদস্য) বিরুদ্ধে প্রতারাণাও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বিহারকোল বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিহারকোল বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে বড়াল ব্রীজের কাছে গিয়ে শেষ হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য সাইফুল ইসলাম, জুয়েল রানা, ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন, স্থানীয় মশিউর রহমান মানিক, রেখা বেগম সহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, যুবকদের বন্ধুত্বের জালে ফেলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি, ফোন কল রেকর্ড ও ভিডিও চিত্র ধারণের পর প্রতারণা করে, এরপর মামলা ও নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই সাদিয়া নওশীন অন্তরার মূল উদ্দেশ্য।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সাদিয়া নওশীন অন্তরার মূল টার্গেট সম্পদশালী ব্যবসায়ী ও সরকারি চাকরিজীবী যুবক। ওই যুবতীর প্রেমের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন একাধিক যুবক ও তাদের পরিবার। বক্তারা আরও বলেন, সম্প্রতি গালিমপুর গ্রামের মোঃ জুয়েল ইসলামের ছেলে মোঃ কৌশিক আহমেদ (২১) এর নামে গত ৬ আগস্ট নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানায় ষন্ত্রমূলকভাবে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে। নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিলে বেড়াতে এসে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক কলেজ ছাত্রীর গোপনে অপত্তিকর নগ্ন ভিডিও ধারন করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে কৌশিক নামের ওই কলেজ বিরুদ্ধে গত ৬ আগষ্ট নলডাঙ্গা থানায় পর্ণ্যেগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।গত বুধবার (৯ আগষ্ট) রাতে জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রাম থেকে কৌশিক কে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত কলেজ ছাত্র কৌশিক (২১) নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের জুয়েল ইসলামের ছেলে ও বাগাতিপাড়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র।ভুক্তভোগি ছাত্রী একই উপজেলার বাসিন্দা সে ওই মামলায় বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
এছাড়াও ভুক্তভোগী একই ইউনিয়নের সোলইপাড়া গ্রামের পুলিশ সদস্য রাজিকুল ইসলাম পাপ্পুর চাচা সাইফুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে তার ভাতিজার সাথে প্রেমের সম্পর্কের দাবি তুলে ভয়ভীতি দেখালে স্থানীয়ভাবে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করতে বাধ্য করে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে স্ট্রাম্পের মাদ্যমে লেখাপড়া করে ওই টাকা প্রদান করা হয়। এরপর আবরো অন্য কারো প্ররোচনায় গত ২৮ আগস্ট দুপুরে তার ভাতিজা পাপ্পুকে বিয়ের দাবিতে তাদের বাড়িতে অবস্থান করে আত্মহত্যার হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। তাকে মারধর করা না হলেও সে হাসপাতালে বর্তি হয় এবং থানায় অভিযোগ করেন। অপরদিকে মানব বন্ধনের পর পরই নিজের নিরাপত্তা এবং এসিড দিয়ে ক্ষতি করার অভিযোগে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় সাধার ডায়েরি দাখিল করেন অন্তরা। শনিবার দুপুরে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় নিরাপত্তা সংকটের কথা জানিয়ে জিডি করেন তিনি। এরপর উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তার অসহায়ত্বের কথা জানান। সাদিয়া নোশিন বলেন, পুলিশ সদস্য রাজিকুল ইসলাম পাপ্পু তার সর্বনাশ করে বাঁচার জন্য তার পরিবারের লোকদের দিয়ে উপজেলার বিহারকোল বাজারে মানববন্ধনের নামে প্রকাশ্যে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমি রাস্তায় বেড় হলে আমার মুখে এসিড নিক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছে এবং আদালত অবমাননা করে চলমান মামলার বিষয়ে মন্তব্য করেছে। কিন্তু মানব বন্ধনে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মিরা জানান, এমন ধরণের ভয়ভিতী প্রদর্শনের কথা তারা শুনেননি। বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি শফিউল আযম খাঁন বলেন, সাদিয়া নোশিনের জিডির কপি পেয়েছি।বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।