এক সাথে মা ও ছেলের এসএসসি পাশ

  • শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩
এক সাথে মা ও ছেলের এসএসসি পাশ#সংবাদ শৈলী

 

স্টাফ রিপোর্টার

নাটোরের সিংড়ায় মা ও ছেলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এক সাথেই পাশ করেছেন। ছেলে জিপিএ ৫ পেলেও মা মেয়েছেন ৪.৫৪ পয়েন্ট। এতে মা ছেলে উভয়েই খুশী।

জানা যায় উপজেলার সোনাপুর গ্রামে লোকমান হোসেনের সাথে লিপি আক্তারের  সংসার জীবনের শুরু হয় ২০০২ সালে।ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল এস এস সি পাশের। কিন্তু  পঞ্চম শ্রেনী পাশের পরে মাধ্যমিকে গড়ানোর আগেই শুরু করতে হয় সংসার জীবন। সংসার জীবনে লিপি অক্তারের    দুই মেয়ে আর এক ছেলের জন্মাম হয়। মায়ের দায়িত্ব পালন করার সময় আবারো সেই স্বপ্ন দেখাতে স্বামী ভর্তি করে দিলেন চককালিকা পুর কারিগরি স্কুলে। নবম শ্রেনীতে উঠতেই স্বামীর অকাল মৃতুতে বন্ধ হয়ে যায় তার লেখা পড়া।  সংসার আর ছেলে মেয়েদের মানুষ করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।  কিন্তু মায়ের বই পড়ার আগ্রহ দেখে   ছেলে মেয়ের অনুরোধে আবারো পড়া লেখা শুরু ২০২৩ সালে। ড্রেস মেকিং ট্রেড থেকে সিংড়া কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে পরিক্ষায় অংশগ্রহন করেন তিনি। আশা ছিল এ প্লাস পাওয়ার। তার পরেও ৪.৫৪ পয়েন্ট পেয়ে পাশ করেন তিনি।  লিপি আকতার এই রেজাল্টে উচ্চাস প্রকাশ করে বলেন, ছেলে মেয়েদের যত্ন নেওয়া সংসার এবং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বরের দায়িত্ব পালন করার পরেও তিনি এই ফলাফলে খুশী। লিপি । লিপি  চামারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওযার্ড সদস্য এবং  ইউনিয়ন  মহিলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি লিপি আক্তার হাসি। বড় মেয়ে লিমা খাতুন এস এস সি পাশ করে কলেজে। ছোট মেয়ে লিজা খাতুন নবম শ্রেনীতে। ছেলে লিয়াকত হোসেন গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরিক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেলেও মায়ের রেজাল্টে বেশি খুশি। লিপি আক্তার আনন্দ প্রকাশ করে বলেন ছেলের সাথে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে খুব ভালো লাগছে । তবে আক্ষেপ করে বলেন স্বামী বেঁচে থাকলে বেশি খুশি হতেন। আগামীতে সন্তানদের পাশাপাশি তিনি লেখা পড়া চালিয়ে যেতে চান।
ছেলে লিয়াকত হোসেন বলেন, আমাদের মানুষ করতে মা অনেক পরিশ্রম করেন ।  পাশাপাশি পড়া লেখা করে পাশ করেছেন আমরা সন্তান হিসেবে বেশি গর্বিত । তিনি বলেন আমার মা একজন উদ্যোক্তা  । নারী সেলাই প্রশিক্ষন কেন্দ্র আছে সেখান থেকেই আমাদের যা উপার্জন হয় সেই অর্থ দিয়েই সংসার চলে আর আমার মা সহ আমাদের লেখাপড়ার করচ বহন করতে হয়।
সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, স্বামীর মৃত্যুর লিপি সন্তানদের জন্য মা হিসেবে এলাকায় অলোরন সৃষ্টি করেছেন । লিপি শুধু মা হিসেবেই নয় সে নিজেও একজন সফল শিক্ষার্থী । আমরা এলাকার পক্ষ থেকে তার সাফলতা কামনা করি। চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন মোল্লা বলেন, লিপি আক্তার আমাদের পরিষদের গর্ব । তাদের মা ছেলের পাশের খবরে এলাকার সবাই খুব আনন্দিত ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
COPYRIGHT 2023 sangbadshoily, ALL RIGHT RESERVED
Site Customized By NewsTech.Com