স্টাফ রিপোর্টার
সৌদি আরবে একটি ফার্নিচারের কারখানায় কাজ করা নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ওবাইদুল ইসলামের (৩৩) বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। স্বপ্ন পূরণ না হতেই দূর্ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে হল তাকে। সংসারের অভাব ঘোচাতে ধার দেনা করে প্রবাসে পাড়ি জমান তিনি। মৃত ওবাইদুল ইসলাম-৩৩ নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে।
সরজমিনে মৃত ওবাইদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর অশিতপর বৃদ্ধা মা রাহেলা বিবি কেবলই সন্তানের ছবি হাতে নিয়ে বিলাপ করছেন । পরম আদরে ছবিতে হাত বুলাচ্ছেন আর চুমো খাচ্ছেন। বৃদ্ধা মা বিলাপ করতে করতে বলছেন ওরে আমারে সোনারে । তুই কোথায় গেলিরে। আমার কাছে আয় বাবা । মা ভাই ও বোনদের আর্তনাদে ভারী হয়ে আছে বাড়ির পরিবেশ। ওবাইদুলের স্বজন ও ও স্থানীয়রা জানান, অভাবী পরিবারে সাত ভাই ও বোনের মধ্যে ওবাইদুল ছিল সবার ছোট। সংসারের অভাব মেটাতে ধার দেনা করে ২০১৯ সালে সৌদি আরবে পাড়ি জমায় সে। সেখানকার দাম্মামের হুফুফ শহরের একটি ফার্নিচার কারথানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। সেখানে কাজ করে ধার দেনা পরিশোধ করেছিলেন। এবার তার পালা ছিল স্বপ্ন পূরণের। কয়েকদিন আগেও তিনি মোবাইল ফোনে মা রাহেলা বিবির সাথে শেষ কথা বলেন। তখন ওবাইদুল ভালো আছে বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু আজ শনিবার সকালে তিনি ওবাইদুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওবাইদুলের মৃত্যর খবর পান তারা।গ্রামের বৃদ্ধ জয়নাল আবেদীন বলেন, অত্যন্ত শান্ত ও বিনয়ী ছেলে ছিল ওবাইদুল। পরিবারের দুঃখ ঘো*চাতে সে বিদেশে পারি দিয়েছিল।তার স্বামী হারা বৃদ্ধা মা ও ভাইবোনেরা শোকে মুহ্যমান। বৃদ্ধা মায়ের আহাজারীর পাশাপাশি পুরো গ্রাম শোকে মুহ্যমান। এমন শান্ত ছেলেটির অকাল মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।
মৃত ওবাইদুলের ফুফাতো ভাই ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ২০১৯ সালে তিনি সৌদি আরবে যান। সর্বশেষ তিনদিন আগে পরিবারের সদস্যদের সাথে তার কথা হয়। তার মরদেহ নিয়ে আসার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজিনা খাতুন জানান, তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ার্যমান সোহরাব হোসেনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছেন। পরিবারের সদস্যরা মরদেহ ফিরে পাওয়ার জন্য একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) আবুল কালাম জানান, তিনি সৌদি আরবে মৃত্যুর একজনের বিষয় জানতে পেরেছেন। বাকী দুজনের সংবাদ শুনেছিলাম। কিন্তু এমন কোন সংবাদ আমরা জানতে পারিনি।