স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের লালপুরে পুলিশ পরিচয়ে যুবদলের নেতা মাসুদ রানাকে তুলে নেওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে হাত-পা বাঁধা ও রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর ২০২৩) রাত ১২ টার দিকে উপজেলার গোপালপুর মহিলা আদর্শ কলেজের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। আহত মাসুদ রানা উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের নাগশোষা গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে এবং বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিলমাড়িয়া বাজারের সরদার টেলিকম নামে কসমেটিক্স ও বিকাশের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন মাসুদ রানা। কিছুদুর যাওয়ার পরেই আগে থেকেই অপেক্ষমান একটি সাদা মাইক্রোবাসে ৭/৮ জন সাদা পোষাকের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক মাসুদ রানাকে মাইক্রেবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা মাসুদ রানার চোখ ও মুখ বেঁধে নিয়ে মাইক্রোবাসের ভিতরে ডান হাতে কনইুতে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ডান পায়ে চাকু দিয়ে ৬টি আঘাত করে ও হাঁটুর নিচে রড দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে এলোপাথাড়ি আঘাতের পর হাত-পা বেঁধে ও রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মৃত ভেবে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে গোপালপুর মহিলা কলেজে সামনের খাদে ফেলে রেখে যায়। কিছুক্ষণ পর রানার জ্ঞান ফিরলে তার-চিৎকারে বিষয়টি সেখানকার নাইট গার্ডের নজরে আসে। এসময় তিনিসহ এলাকার লোকজন মিলে তাকে খাদ থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় ফোনে লোকজন তার পরিবারকে জানালে পরিবারের লোকজন দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সুরুজ্জামান শামীম বলেন, আহত ব্যক্তিকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করায় তার রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল। একারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত মাসুদ রানার ভাই সোহেল রানা বলেন, তার ভাই বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তাকে অপহরণ কওে নিয়ে গিয়ে মারপিটে গুরুতর আহত করা হলেও কোন টাকা পয়সা নেয়নি। এ থকেই তাদেও ধারণা রাজনৈতিক কারণে তার ওপর এ ধরণের নির্যাতন চালানো হয়েছে।
আহত মাসুদেও ভাতিজা সালাহ উদ্দিন জানান, পুলিশ পরিচয়ে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালিয়ে ফেলে রেখে গেছ্ েদুর্বত্তরা এটা মাসুদ তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু তারা কারা সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, পুলিশ তাকে আটক করেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শনিবার বিকাল পর্যন্ত তিনি কোন অভিযোগ পাননি।
ডিবি পুলিশের ওসি আবু সাদাৎ বলেন , এই অপহরণ ও নির্যাতনের বিষয়ে কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনতে কাজ করছেন তারা।