স্টাফ রিপোর্টার
নাটোর প্রতিনিধি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর বাজারে ‘চাঁদা না পেয়ে’ ১০টি দোকানে তালা লাগানোর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে নাটোর জেলা জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার বিকেলে নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির মীর নূরুল ইসলাম দাবি করেছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে চাঁদাবাজির কোনো সম্পর্ক নেই।
লিখিত বক্তব্যে জামায়াতের আমির বলেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চাঁদা না দেওয়ায় বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানে তালা লাগানো ও এ ঘটনায় জামায়াত নেতাসহ চারজন গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটি জামায়াতের নজরে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, আহম্মদপুর বাজারের বিরোধপূর্ণ কয়েকটি দোকানঘরের মালিকানা নিয়ে কোরবান আলীদের সঙ্গে রুহুল আমীনদের মামলা চলছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেখানে সালিস বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। বৈঠকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোরবান আলীদের প্রতি মাসে দোকানভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার করে টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টিকে ‘চাঁদা দাবি করা’ উল্লেখ করা হয়েছে। এটা অন্যায়।
তবে সংবাদ সম্মেলনে দোকানে তালা লাগানোর বিষয়টিকে ‘অন্যায়’ বলে স্বীকার করেন জেলা জামায়াতের আমির মীর নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, যিনি তালা লাগিয়েছেন, তিনি জামায়াতের নেতা না। সত্যিই যদি চাঁদাবাজির ঘটনা থাকত, তাহলে অভিযুক্তদের অবশ্যই দল থেকে বহিষ্কার করা হতো। যদি কেউ বাড়াবাড়ি কিছু করে থাকে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে তাহলে কেন ঘটনাটিকে চাঁদাবাজি বলা যাবে না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে জামায়াতের জেলা আমির বলেন, ‘কেউ অভিযোগ করতেই পারে। পুলিশ তা তদন্ত করে দেখবে। কিন্তু আমরা মনে করি, কথিত চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক না।’
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘দোকানঘরের মালিক না হয়েও ভাড়া চাইলে সেটিকে চাঁদাবাজি না বলে কী বলা যাবে? অন্যায়ভাবে টাকা দাবি করা এবং তা দিতে অপারগতা জানানোর কারণে মারধর করা আইনের দৃষ্টিতে অবশ্যই চাঁদাবাজি। জামায়াত তাদের নেতা-কর্মীদের রক্ষার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে।’
এদিকে চাঁদা না দেওয়ায় আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানঘরে তালা লাগিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ চারজনকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি বেদখল হওয়া দোকানঘরগুলোও দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের জিম্মায় দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়। বড়াইগ্রাম আমলি আদালতের বিচারক তৌহিদুর রহমান আজ বিকেল চারটার দিকে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ নিয়ে সংবাদ শৈলী অনলাইনে বড়াইগ্রাম চাঁদা না দেওয়ায় ১০ দোকানে তালা, জামায়াত নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪ ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।