স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভায় দফায় দফায় উত্তেজনা, ধাক্কাধাক্কির ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সম্মেলনের প্রায় আড়াই বছর পর গঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রথম সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী গোপনে কমিটি গঠণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সভাকক্ষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সাথে মিলনায়তন থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে সভার পরবর্তী কার্যক্রম শেষ করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বড়াইগ্রাম পৌরসভা মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজীর সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়। শুরুতেই সভাপতির বক্তৃতাকালে সম্প্রতি উপ-নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী কমিটি গঠণের প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, কারো সাথে আলোচনা না করেই এ কমিটি গঠণ করা হয়েছে। এছাড়া চিহ্নিত জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে এ কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। এ সময় নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং সংসদ সদস্যের দাবির পক্ষে ও বিপক্ষে তারা হৈচৈ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তা ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে রুপ নেয়। নেতাকর্মীরা তাতেও শান্ত না হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার ও শাহজাহান কবীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুর্ত্তজা আলী বাবলু, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন , ও বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়ন, জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদ-উজ জামান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু বক্তব্য রাখেন। পরে প্রধান অতিথি ৭১ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্য ও ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাংসদ ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর বলেন, সম্মেলনে মাত্র কমিটির পাঁচজন সদস্যের নাম ঘোষনা করা হয়েছিল। তাদেরকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পুর্নাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করার কথা ছিল। কিন্তু তাদেরকে না জানিয়ে একরফা ভাবে উপজেলা সভাপতি ও সম্পাদক জামাত বিএনপির লোকদিয়ে কমিটি গঠন করেছে। তাদের এই কমিটি পকেট কমিটি।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী বলেন, নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, যদি কমিটি সম্পর্কে কারো কোন অভিযোগ থাকে আমাকে লিখিত ভাবে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, সাংসদ সিদ্দিক দলীয় নেতা-কর্মীদেরদের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বিচ্ছিন্ন কিছু লোক হাজির করে সভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তার করছিলেন।