স্টাফ রিপোর্টার

নাটোর শহরের হাফরাস্তা এলাকার একটি বাড়ির সামনে থেকে অবরোধে নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে তাশরিক জামান রিফাতকে পুলিশ আটকের করে।এসময় রিফাতের দাড়িয়ে থাকা পিছনের একটি বাড়ি হতে মুখোশ , মশাল ও মোটরসাইকেল। আটক তাশরিক জামান ওরফে রিফাতস্থগিতকৃত কমিটি ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি। তিনি নাটোর পৌরসভার হাফরাস্তা এলাকার মোস্তফা জামানের ছেলে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় রিফাতকে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ভবনের সামনে থেকে আটক করে পুলিশ। তবে বুধবার বেলা ৩টার দিকে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়। কিন্তু ছাত্রলীগ ওই নেতাকে আটকের পর পরই বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যে পুলিশ জানতে পারে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় বুধবারের অবরোধের সমর্থনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের সংঘটিত হচ্ছে একদল যুবক। তখন ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় সেখানে তিন যুবকের মধ্যে দুজন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে রিফাতকে আটক করে পুলিশ। এসময় কেরোসিনে ভেজানো ৮টি বাঁশের তৈরি মশাল, ১৫টি মুখোশ ও গুলাল উদ্ধার করা হয়।’এসময় ওসি আরও বলেন, ‘আটক রিফাতের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সেখানে কী উদ্দেশে তারা একত্রিত হয়েছিলেন।’
খবর শুনে ওই এলাকায় যান সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। এসময় শিমুল সাংবাদিকদের জানান, রাতেই শহরের মধ্যে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার জন্য কয়েকজন বিএনপিকর্মী প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন খবর পেয়ে ডিসি, এসপি ও ওসিকে জানানোর পাশাপাশি তিনি নিজেও ছুটে আসেন।তার আগেই কিছু নেতা কর্মি সেখানে পৌছে যান। তিনি বলেন,গত কয়েকদিন ধরে অবরোধের সমর্থনে বিএনপিকর্মীরা শহরের বাইরে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। রাতে তাদের টার্গেট ছিল শহরের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করা।
তবে আটক হওয়ার পওে রিফাত সাংবাদিকদের জানান, তিনি ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি। তবে রাজনৈতিক কারণে তাদের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। তিনি তার বাড়ির পাশে অপর একটি বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাকে আটক করে। তবে পিছনের বাড়িতে কি আছে বা কি হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তাশরিক জামান ওরফে রিফাতের বাবা মোস্তফা জামান দাবি করেছেন, তার ছেলে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। বিএনপির হয়ে নাশকতা সৃষ্টির প্রশ্নই আসে না। তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন রিফাত ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মি। তিনি ছাত্রলীগের সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ গ্রহণ করেন। তবে তাদের কমিটি অনুমোদনের পূর্বে জেলা কমিটি থাকা অবস্থায় এক রাতে ৯টি ওয়ার্ড কমিটি পৌর ছাত্রলীগ অনুমোদন দেয়। এজন্য ৯টি ওয়ার্ড কমিটি স্থগিত করা হয়। তবে রিফাত নিয়মিত সাংগাঠনিক কাজে অংশ গ্রহণ করে। এসময় ফরহাদ বিন আজিজ তার সাথে সাংগাঠনিক কাজে অংশ গ্রহণের কয়েকটি ছবি এবং তাদেও পূর্বেও অনুমোদন কমিটির তালিকা কালের কণ্ঠের এই প্রতিনিধির হাতে পৌছে দেন। তিনি দাবি করেন রাজনৈতিক কারণে রিফাতকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা থানা পুলিশকেও বিষয়টি জানাই।
অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতা আটকের সংবাদেও পর পরই বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।
বুধবার বেলা ৫টার দিকে নাটোর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেন, রিফাতকে আটকের পর খোঁজ খবর ও জিজ্ঞাাসাবাদে জানা গেছে রিফাত নাশকতার পরিকল্পনার সাথে জড়িত ছিল না এবং তিনি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মি। এ কারণে তাকে বেলা ৩টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।