স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরে শনিবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রায় অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের উপরে শহরের বিভিন্ন স্থানে মুখোশধারীদের হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে সদরের কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে চারজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে সকাল থেকে দুপুর ১২টার পর্যন্ত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ও পাশে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারী নেতাকর্মীরা অবস্থান করে বিক্ষোভ করায় নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা শুরু করতে পারেনি বিএনপি। পরে বেলা একটার দিকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে পদযাত্রা করা হয়।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, সকাল আটটার দিকে ভিন্ন পথে পদযাত্রায় অংশ নিতে আসছিলেন সদরের কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়র বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ তার অনুসারীরা। এসময় নাটোর চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দুটি কালো রং এর হাইচ গাড়ি থেকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা ধারালো হাসুয়া ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপরে হামলা করে। হামলায় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, একই ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ও ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি তুহিনসহ ৫জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর ভাবে আহত করে। আহতদের মধ্যে চারজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে শনিবার সকালে পদযাত্রায় আসার সময় শহরের বিভিন্ন হামলা চালিয়ে জেলা যুবদলের নেতা সুজাউল সুজা, যুবদল নেতা এনায়েত উল্লা মিলটন,শরিফুল ইসলাম, জাকির হোসেন, রেজাউল করিম, লিয়ন, ছাত্রদলের মোস্তফা আনাম, মোজাম্মেল হোসেন, ফিরোজ ও গোলাম মোস্তফাসহ ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।তিনি বলেন এমপি শিমুল সমর্থকদের বিএনপি অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় ও রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাসভবনের সামনে অবস্থান করায় তারা নির্ধারিত সময়ে কর্মসূছী পালন করতে পারেননি। দুপুরে তারা স্থান ত্যাগ করার পরে বেলা একটার দিকে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি।
পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন, মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, সাইফুল ইসলাম আফতাব, সদর থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, ছাত্রদল সভাপতি কামরুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচি বানচাল করে দিতে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা একদিকে অস্ত্র নিয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নিচ্ছেন অপর দিকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচিতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপরে হামলা করে রক্তাক্ত করছেন। এরপরও বিএনপি ধর্য্যরে সাথে দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আওয়ামী লীগের সদর আসনের মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগীতায় নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে দলের বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা বিভিন্ন সময়ে বিনা উস্কানিতে একের পর এক এসব হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, বিএনপি শহরে আগুন সন্ত্রাস সহ নাশকতা ঘটাতে পারে এমন সংবাদ আমাদের কাছে ছিল। এজন্য দলীয় নেতা কর্মিদের রাজপথে অবস্থান নিতে বলেছিলাম যাতে তারা কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড না ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, বিএনপির ওপর হামলার জন্য তার নেতা কর্মিরা দায়ী নয়। এমনকি বিষয়টি তিনি জানেন না। এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপির একটি অপপ্রচার ।
নাটোর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেছেন, নাটোর চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে হামলার খবর পেয়ে পুলিশসহ তিনি নিজে সেখানে গিয়ে কাউকে পাননি। এ ছাড়া কোথাও তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি।