স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরে পরকীয়ারজের ধরে এ হত্যার ২২ মাস পরে পর টয়লেটের মেঝেতে পুঁতে রাখা মাফিজুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার উদ্ধার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম । সোমবার দুপুরে তার কার্যালয়ের সামনে এই প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এর আগে রোববার (৩ মার্চ) জেলার গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বালিকা মাদরাসার টয়লেটের মেঝে খুঁড়ে শফিজুল ইসলাম ২৮এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।মাফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া মহল্লার আজাদ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পেশায় রঙ মিস্ত্রি ড়াশ উপজেলার তালম কাচারীপাড়া গ্রামেরওজারত আলীর ছেলে হাবিব সরকার (২৬), নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় তালুকদার পাড়া এলাকার আহাম্মদ খলিফার ছেলে তারা খলিফা , খামার নাছকৈড় গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৪২) এবং তাড়াশ উপজেলার খামার নাচকৈড় গ্রামের তাহের খলিফার মেয়ে তানজিলা খাতুন (২৮)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি তারিকুল ইসলাম বলেন ,নিহত মাফিজুল ইসলাম এবং আসামী তানজিলা খাতুন একসাথে একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরীকে কাজ করতো। একসাথে কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামী আল হাবিব সরকার এর সাথে আসামী তানজিলা খাতুনের বিবাহ হলেও আসামী তানজিলা খাতুন ডিসিস্ট মাফিজুল ইসলামের সাথে মাঝে-মধ্যে কথাবার্তা বলতো। এই বিষয়ে নিয়ে আসামী হাবিব সরকার ও তানজিলা খাতুনের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত অনুমান ১০.৩০ ঘটিকায় বাদীর পুত্র মাফিজুল ইসলাম তার বাড়ী হতে বের হয়ে যায়। কিন্তু যথা সময়ে মাফিজুল বাড়ী ফিরে না আসায় তাকে খোঁজা-খুজি করতে থাকে। কিন্তু সন্ধান না পেয়ে ২০২২ সালের ৭মে গুুরুদাসপুর থানায় একটি জিডি করা হয়। অপরদিকে পারিবারিক বিরোধের কারণে আসামী আল হাবিব সরকার ও তানজিলা খাতুনের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দিলে তানজিলা খাতুন নাটোর কোর্টে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ১নং আসামী আল হাবিব সরকার নাটোর জেল হাজতে আটক থাকাকালীন গুরুদাসপুর থানার চাচকৈড় খলিফাপাড়া মাজাফফর মুন্সির ছেলে জাকির মুন্সির (৪০) সাথে জেলে থাকা অবস্থায় আসামী মোঃ আল হাবিব সরকারের সাথে পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়। তাদের মধ্যে নিয়মিত কথাবার্তা হতো। উক্ত কথা বার্তা চলতে থাকার একপর্যায়ে মোঃ জাকির মুন্সির নিকট আসামী আল হাবিব সরকার বলেন যে সে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাদীর পুত্র মাফিজুল ইসলামকে জীবনের মতো শেষ করে দিবে মর্মে হুমকী দেয় এবং খুন করার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে আসামীরা পূর্ব-পরিকল্পনা মোতাবেক তানজিলা খাতুন প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে আসামী আবু তাহের খলিফা @ খলিফার বসতবাড়ীতে ডেকে নেয়। মাফিজুল ইসলাম আসামী আবু তাহের খলিফার বাড়ীতে গেলে আসামীরা মাফিজুল ইসলামকে ধরে মুখে কচটেপ বেঁধে বসত বাড়ীর শয়ন ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়।
অতঃপর আসামীরা মাফিজুল ইসলামের হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে এবং লোহার শাবল দিয়ে মাফজিুলরে বুকে আঘাত করে হত্যা করে। পরর্বতীতে আসামীরা বাদীর পুত্র মাফিজুলের মৃতদেহ একটি প্লাষ্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ীর নিকটে বালিকা মাদ্রাসার টয়লেটের মধ্যে র্গত করে মাটিতে পুতে রাখে। বাদী বিষয়টি জানতে পেরে গত ১ মার্চ গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনরে জন্য ব্যাপকভাবে তদন্ত শুরু করা হয়। একাধিক বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ করে করে সোর্সের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আসামী গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন জায়গা হতে আসামীদের গ্রেফতারর্পূবক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা মামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করায় আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয় এবং আসামীদের নিবিড়িভাবে জিজ্ঞাসাবাদরে জন্য পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ০৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অতঃপর সকল আসামীদেরকে নিবিড়িভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসামী হাবিব সরকার, তানজিলা খাতুন এবং আবু তাহের খলিফা @ তারা খলিফাদের দেখানো মতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তার ও সাক্ষীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে গত রবিবার বেলা একটা ৪০মিনিটের সময় মাফিজুলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম, ক্রাইম এন্ড অবস বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম, সিংড়া-গুরুদাসপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামান। পরে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।