নাটোরে কোরবানীর জন্য ৫লক্ষাধিক পশু প্রস্তত,শুরু হয়েছে বেঁচা কেনা

  • বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩
কোরবানীর গরু#নাটোর#

স্টাফ রিপোর্টার

নাটোরের বিভিন্ন গরুর খামারে লালনপালন করা পশু অঅসন্ন ঈদ উল আজহার জেলার চাহিদা মিটিয়েও বিপুল পরিমান পশু দেশেল বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। প্রাণি সম্পদ বিভাগ জানায় জেলার বিবিণœ খামরে ৫লাখ ২০ হাজার ২৩৮টি পশু ঈদ উল আজহা উপলক্ষে বিক্রয়ের উপযোগী রয়েছে। এর মধ্যে জেলার চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ২টি পশু । বাকী পশুগুলি রাজধানী ঢাকাসহ বিবিণœ জেলায় পাঠানো হচ্ছে। ঈতমদ্যেই বেশ কিছু পশু বিক্রি হয়ে গেছে। প্রায় ১৮ হাজার খামারী এসব পশু লালণ পালন করেছেন।
সরেজমিনে বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতারা পছন্দের পশু কিনতে খামারে ভিড় করছেন। অনেকে পশু ক্রয় করে খামারে রেখে যাচ্ছেন। অনেকে দরদাম করে পশু কিনে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন। নাটোর জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসে নাটোর সদরের তেবাড়িয়া, বড়াইগ্রাম উপজেলার মৌখাড়া হাট, বাগাতিপাড়ার পেড়াবাড়িয়া, গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড়, গোপালপুর উপজেলার মধুবাড়ী এবং সিংড়া ফেরিঘাটে। তবে কোরবানির পশু কেনাবেচা পুরোদমে শুরু না হলেও দু-এক দিনের মধ্য শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। অনলাইন ফেসবুক প্লাটফর্মে কোরবানির পশু কেনাবেচা কাজ শুরু করেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৮৩ হাজার ৮২০টি ষাঁড় , ১৩ হাজার ১৭২টি, গাভী ১৪ হাজার ২৪২টি বলদ, ২ হাজার ৮২২টি মহিষ, ৪৬ হাজার ১৬৯টিভেড়া এবং ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪টি ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তেবাড়িয়া এলাকার খামারি আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য খামারে ১০ গরু প্রস্তুত করেছেন। তিনি প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টিকর খাবার, খৈল, গম, ভূষি, ছোলা এবং সবুজ ঘাস খাইয়ে খুব সহজেই পশু মোটাতাজা করেছেন। যদি বাজার ভালো থাকে তাহলে প্রতি গরু দেড় থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের ভুষণগাছা গ্রামের ইখলাস উদ্দিনের খামারে গিয়ে দেখা যায় তার খামরে ফিজিয়ান দেশী সহ বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। কোরবানীকে ঘিরে তার খামারে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি গরু প্রস্তত রাখা হয়েছে। সাইজ ভেদে একলাখের ওপর থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের গরু তার খামারে রয়েছে। ছোট জাতের কিছু গরু এক থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। খামারে এসেই ক্রেতারা গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তার খামারে রয়েছে বেশ কিছু মহিষ ও রয়েছে। তবে বড় সাইজের গরু রাজধানী ঢাকাতে নিয়ে যাবেন। নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এলাকার খামারি আবুল হোসেন বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য খামারে ৩০টি ষাঁড় মোটা তাজা করেছেন । বর্তমানে গরুর বাজার মূল্য মোটামুটি ভালো। দুইটি ষাঁড় বিক্রি করেছি। আশা করছি, সামনে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তবে খাদ্যের দাম বাড়ায় বর্তমানে খামার তৈরি করা তেমন লাভ নয়। খাদ্য দাম কমলে আমরা খামারিরা কিছুটা লাভবান হতে পারব।
সদর উপজেলার হয়বতপুর এলাকার খামারি আনিছুর রহমান বলেন, ৪ বছর ৫টি ষাঁড় দিয়ে খামার গড়েন তিনি। বর্তমানে খামারে মোট ২৫টি ষাড় গরু রয়েছে। যার মধ্য ২০টি ষাঁড় গরু কোরবানির বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যদি গরুর দাম বর্তমান বাজারমূল্যে থাকে তাহলে ৫০-৬০ লাখ টাকা বিক্রি করবেন বলে জানান।
গরু কিনতে আসা আসিক নামে নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানি করার জন্য মাঝারি গরু খুঁজছি। এবছর গরু প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দাম বেশি মনে হচ্ছে। যেহুত কোরবানি করতে হবে তাই বেশি দাম দিয়েই গরু কিনতে হচ্ছে।
পশু কিনতে আসা ফাযজুল ইসলাম ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, প্রতি বছর খামার থেকে গরু ক্রয় করে কোরবানি দেই। খামার থেকে গরু কিনলে সুবিধা রয়েছে, ঈদ পর্যন্ত গরু খামারে রাখা যায়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বাড়তি ঝামেলা পোহাড়ে হয় না। তবে এ বছর গরুর দামটা বেশি। দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মধ্য ষাঁড় খুঁজছি। পচ্ছন্দ হলে দরদামে মিলে গেলেই কিনবো।
নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, এ বছর নাটোর জেলায় ৫ লাখের অধিক কোরবানির পশু লালণ পালন করেছেন খামারীরা। প্রাকৃতিক উপায়ে পশু হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে অর্ধেক পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবারহ করা হবে। এবছর ভারত থেকে কোনো পশু আসছে না। ফলে খামারিরা সঠিক মূল্য পাবে বলে আশা করছেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
COPYRIGHT 2023 sangbadshoily, ALL RIGHT RESERVED
Site Customized By NewsTech.Com