দলিল রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ বাগাতিপাড়া ইউএনওর#সংবাদ শৈলীদলিল রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ বাগাতিপাড়া ইউএনওর#সংবাদ শৈলী

স্টাফ রিপোর্টার

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দলিল রেজিস্ট্রির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফ আফজাল রাজন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, সরকারি নির্ধারিত ফি’র বাইরে কোনো অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট দলিল লেখকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলা পরিষদের বড়াল সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই ঘোষণা দেন ইউএনও। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি দপ্তরের প্রধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।সভায় ইউএনও মারুফ আফজাল রাজন বলেন, “সরকারি নির্ধারিত ফি’র বাইরে এক টাকাও বেশি নেওয়া যাবে না। বেশি নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণকে কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না। আমাদের লক্ষ্য স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করা।”উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বাগাতিপাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রির সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের শিকার হচ্ছেন।স্থানীয় বাসিন্দা আ. সালাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এখানে দলিল লেখকদের সিন্ডিকেট চলে আসছে। এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এবার ইউএনও মহোদয়ের এমন কঠোর পদক্ষেপে আমরা সত্যিই স্বস্তি অনুভব করছি। আমরা চাই, প্রশাসন নিয়মিত নজরদারি চালাক এবং সকল ফি তালিকা স্পষ্টভাবে অফিসে প্রদর্শিত হোক। মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগও অবশ্যই নেওয়া হোক।”বাগাতিপাড়ার দলিল লেখক জিন্নাত আলী বলেন, “আমরা কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ চাই না। আমাদের বেতনভাতা নেই, আমরা শুধু গ্রাহকের কাজ সম্পন্ন করি। গ্রাহক যা দেন, আমরা সেটাই গ্রহণ করি। তবে সরকারি ফি তালিকা অফিসে স্পষ্টভাবে টাঙানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা অবশ্যই থাকা উচিত।”সাব-রেজিস্ট্রার নাইমুদ্দীন বলেন, “অতিরিক্ত ফি কেউ নেন কিনা আমার জানা নেই। হয়তো অজান্তে হয়ে থাকতে পারে। তবে ইউএনও মহোদয়ের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এটি সেবা গ্রহণকারীর স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” স্থানীয়রা মনে করছেন, প্রশাসনের এই পদক্ষেপ জনসাধারণের জন্য বড় ধরনের স্বস্তি বয়ে আনবে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, মাইকিং ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো হবে, সরকারি ফি তালিকা স্পষ্টভাবে অফিসে প্রদর্শিত হবে, এবং সাধারণ মানুষ আর হয়রানির মুখে পড়বে না। ইউএনও মারুফ আফজাল রাজন বলেন, “বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসন জনগণের জন্য কাজ করছে। এখানে কোনো প্রকার অতিরিক্ত অর্থ আদায় সহ্য করা হবে না। সরকারি ফি অনুযায়ীই জনগণ সেবা পাবেন। আমরা নিয়মিত নজরদারি চালাবো এবং যে কেউ বিধি ভঙ্গ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, ইউএনও’র কঠোর পদক্ষেপে দুর্নীতি রোধ হবে, জনআস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারি সেবা আরও কার্যকরভাবে পৌঁছাবে।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *