স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের বড়াইগ্রামে ৪০০ মিটার খাল খননের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা থেকে ২ হাজার একর জমির ফসল রক্ষা করা হলো। উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে সরকারি খাস ও ব্যক্তিমালিকাধীন জমির উপর দিয়ে দুই মিটার প্রস্থ ওই খাল খনন করা হয়। এরফলে বড়াইগ্রাম, লালপুর ও ঈশ^রদী উপজেলার ছয়টি মৌজার ২ হাজার একর জমির ফসল ও পাঁচ শতাধিক বাড়ি জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেল।
শনিবার দুপুরে সরেজমি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ভেকু মেশিন দিয়ে খাল খননের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সন্ধার মধ্যে খনন কাজ শেষ হবে। আর দীর্ঘ প্রতিক্ষার পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থাণীয় ক্ষতিগ্রস্থ শতাশত নারী-পুরুষ দাড়িয়ে খনন কাজ প্রত্যক্ষ করছেন। এসময় পরিদর্শনে যান বড়াইগ্রামের ইউএনও আবু রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) বোরহান উদ্দিন মিঠু, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বড়াইগ্রামের দৌলতপুর ও কচুয়া, লালপুরের মহেশ^র, টিটিয়া, মাঝগাঁও, সুন্দরবাড়ি মৌজার ২ সহ¯্রাধিক একর জমিতে বৃষ্টি আর বন্যার পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই সাথে বাড়ির আঙ্গিনায় পানি জমি বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। এই থেকে পরিত্রানের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন দপ্তরে আবেনদন করেও কাজ হচ্ছিল না। বর্তমান ইউএনও আবু রাসেল স্থাণীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে একদিন সরেজমিন পরিদর্শন করে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে খাল খননের উদ্যোগ নেন। স্থাণীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিককে দেখভালের দায়িত্ব দেন। গত দুইদিন কাজ করে খাল খনন শেষে পানি নিষ্কাশন শুরু হয়।
এসময় কথা হয়, মাঝগ্রামের আতাউরেরর সাথে তিনি বলেন, আমার ১৭ বিঘা জমিতে কোন ফসল হতো না। একই কথা বলেন, দৌলতপুরের কাদের মল্লিকের ৬ বিঘা, রহিজ ভ‚ইয়ার ৫ বিঘা, আব্দুস সোবহানের ১৫ বিঘা, রশিদ ভান্ডারীর ১০ বিঘা জমিতে কোন ফসল হতো না। এই খাল খননের ফলে বছরে তিনটি ফসল ফলবে ওই সকল জমিতে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দৌলতপুরের শামসুল ইসলামের দেড় বিঘা আর ইসমাইলের বাড়ির ভীটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে খাল খনন করতে দেওয়ায় ওই ছয় গ্রামের হাজারো মানুষের দুঃখের অবসান হচ্ছে।
ইউএনও আবু রাসেল বলেন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় ওই ছয় গ্রামের মানুষ চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এখন তাদের সহযোগিতায় এবং সেচ্ছায় জমি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় খাল খনন করে জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা করা হলো। মাটির খাল যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে এবং পলি জমি ভরাট হলে নিজেদের স্থার্থে তাদেরকেই সংস্কার করে চলমান রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারা ঐক্যব্ধা ভাবে চেষ্টা করলে আর কখনোই জলাবদ্ধতায় ফসল নষ্ট হবে না।**