চলনবিলে পানি নামতে দেরি পাঁচ হাজার বিঘায় সরিষা আবাদ হয়নি

  • বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
চলনবিলে পানি নামতে দেরি পাঁচ হাজার বিঘায় সরিষা আবাদ হয়নি#সংবাদ শৈলী

স্টাফ রিপোর্টার
নদীÑনালা, খাল দখল হওয়ায় চলনুবিলের পানি সময় মতো নামতে পারেনি। মওসুম পেরিয়ে গেলেও পানি নামতে দেরি হওয়ায় জমিতে সরিষার আবাদ ব্যাহত হয়েছে। গতবছরের তুলনায় এবছর প্রায় পাঁচ হাজার বিঘা কম জমিতে সরিষা চাষ করেছে কৃষক।
মূলত মৌসুমের শেষের দিকে অতি বৃষ্টিতে বিলে পানি বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন কায়দায় সেই পানির প্রবাহ বন্ধ করে মাছ শিকার করেন এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা। ফলে মওসুম চলে এলেও সময়মতো বিলের পানি নামতে পারেনি। সরিষা আবাদ কম হওয়ায় আশানুরূপ মধু আহরণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন মৌচাষিরা। নাটোর জেলা কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতেÑ চলনবিলের নাটোরে গত মওসুমে ১৬ হাজার ১২৫ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছিল। কিন্তু বিলে পানি থাকায় চলতি মওসুমে ১২ হাজার ৩৭৫ বিঘায় নেমে এসেছে সরিষার আবাদ। এরমধ্যে হালতি বিলে গত বছর ২ হাজার ১০০ বিঘা জমিতে সরিষা বপন হয়েছিল। একই কারণে চলতি বছর ১ হাজার ৫০ বিঘায় নেমেছে। সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় ৪ হাজার ৮০০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ কম হয়েছে। এরফলে টাকার অঙ্কে ৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অথচ চলনবিলের সিরাজগঞ্জ (নাটোরের পাশ^বর্তী) জেলায় গত বছর ৬৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে ৮৫ হাজার ৫৭০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।
নাটোর জেলা কৃষি স¤প্রসারণ কার্যালয়ের কৃষিবিদ মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চলনবিলের মাঝ দিয়ে বহু নদীÑনালা, খাল ও ছোটোছোটো বিল বয়ে গেছে। বর্ষা মওসুমের শেষের দিকে বিলের পানি এসব নদীÑনালা হয়ে নেমে যায়। কিন্তু নদীÑনালা, খালে মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন কায়দায় সোঁতি জাল, বাঁশের বানার বেড়া দিয়ে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এসব কারণে বিলের পানি ধীরগতিতে নামায় নভেম্বরের শুরুতে সরিষার আবাদ করতে পারেননি অনেক কৃষক।
হালতি বিলের খোলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জমসেদ আলী বলেন, সময়মতো বিলের পানি না নামায় গত বছরের তুলনায় এবছর তারা অর্ধেক জমিতেও সরিষা চাষ করতে পারেননি।
চলনবিলের সিংড়ার সাতপুকুরিয়া এলাকার চাষি বজলুর রহমান বলেন, নভেম্বরের শুরুর দিকেই পানি নেমে জমি সরিষা চাষের উপযোগী হয়। বিনাহালে কম খরচে টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেন তারা। কিন্তু চলতি বছর মওসুম পেরিয়ে গেলেও জমি জলাবদ্ধ থাকায় তাদের অনেকেই সরিষা চাষ করতে পারেননি।
মৌচাষি বকুল হোসেন বলেন, বছরে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মধু বিক্রি হয় প্রতি বিঘা সরিষার জমি থেকে। সেই হিসেবে ৪ হাজার ৮০০ বিঘা অনাবাদি জমি থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার মধু আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না এবার।
নাটোরের কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শেই এই এলাকার চাষিরা সরিষার আবাদ শুরু করেছেন। তবে চলতি মওসুমে বিলের পানি নামতে দেরি হওয়ায় বেশ কিছু জমিতে সরিষার আবাদ করা সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
COPYRIGHT 2023 sangbadshoily, ALL RIGHT RESERVED
Site Customized By NewsTech.Com