.স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের গুরুদাসপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরো অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করা হয়। অধিকাংশ আসামীই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থী মোঃ আব্দুল্লাহ বাদি হয়ে গুরুদাসপুর থানায় মামলাটি করেন। আব্দুল্লাহ উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের সাখাওয়াত সরদারের ছেলে। তিনি আহম্মেদপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে এডমিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সবুজ ফকির, কল্লোল ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন উদ্দিন, যুবলীগ নেতা জামাল সরকার, নিষিদ্ধ সংগঠন গুরুদাসপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবলুর রহমান, বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, ধারাবারিষা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও আওয়ামী লীগ সমর্থক জাহিদুল ইসলামসহ আরো অনেকে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই গুরুদাসপুর পৌরসভার বঙ্গবন্ধু সরকারী টেকনিক্যাল কলেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বের করে থানা চত্বর হয়ে বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজ এলাকায় পৌছালে ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আসামিরা এলোপাতাড়িভাবে হামলা চালায়। এতে স্কুল-কলেজের অন্তত ১০ জন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। আন্দোলনে ছাত্র-জনতার চিৎকারে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বাদী মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল চলার সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা প্রকাশ্যে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছিলো। এসকল ভিডিও ও স্থিরচিত্র তাঁদের কাছে সংরক্ষতি আছে। সকল তথ্য প্রমান সংগ্রহ করে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সবাই হামলার সাথে জড়িত। অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
তবে হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবলুর রহমান।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা করলে বুধবার রাতেই এফআইআর হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে। মামলার বেশিরভাগ আসামি ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। পাশাপাশি মামলাটি তদন্ত করে দেখা হবে।#