স্টাফ রিপোর্টার
নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক শরিফুল ইসলাম (৩২) ও সিরাজুল ইসলামকে (৩৫) মারধর করেছে করেছে নৌকা সমর্থকরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর গোডাউন মোড় এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের মধ্যে শরিফুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শরিফুল নাজিরপুর গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি রাজনৈতিকভাবে নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন এবং সিরাজুল নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনিও যুবলীগের সদস্য। তারা দুজনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভনের ট্রাক প্রতিকের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন।
জানা গেছে, হামলাকারীদের মধ্যে নৌকা সমর্থিত ইউপি সদস্য আলম ও আল-আমিন গত রোববার স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক জালাল শাহকে পিটিয়ে যখম করেন। এতে মামলা হয়। ওই মামলায় মঙ্গলবার জামিনে বেরিয়ে এসেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর আরো দুই সমর্থককে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে যখম করেন তারা।
বামপায়ে ব্যান্ডেজ চলাকালীন সময়ে শরিফুল ইসলাম বলেন, নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানের সমর্থক নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব আলী সোমবার তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে না থাকার জন্য নৌকার পক্ষে নির্বাচন করতে বলেন। কিন্তু এ প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। তারই জের ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউপি সদস্য আলম, স্থানীয় আল-আমিনসহ ৮ থেকে ১০জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে জিআই পাইপ এবং লোহার রড দিয়ে এলোপাথারিভাবে মারধর করেন।
অপর আহত সিরাজুল বলেন, শরিফুলের সাথেই ছিলেন তিনি। আলম মেম্বর লোকজন নিয়ে এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এসময় তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে যখম করা হয়।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাহনিক বলেন, আহত শরিফুলের ডান হাত এবং বাম পায়ের হাটুর নিচে একাধিক স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার ধারণা করা হচ্ছে। শরিফুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত সিরাজুলের শরীরের কাটা এবং জখমের চিহৃ রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লাহ বিন কুদ্দুস শোভন বলেন, হামলার শিকার দুই ব্যক্তি তার সমর্থক। তার সমর্থিতদের ওপর হামলা চালিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব আলী বলেন, আহত শরিফুল এবং সিরাজুল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নন। মূলত আলম মেম্বারের সাথে পারিবারিক দ্ব›েদ্বর জের তাদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তার কোনো হাত নেই।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।