স্টাফ রিপোর্টার
রেলের ধারে কুড়িয়ে পাওয়া টাকাসহ পোশাকভর্তি ব্যাগ ফেরত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার শিরিন-জিয়া দম্পতি। বুধবার নিজের বাড়িতে মালিকের হাতে টাকাসহ মালামাল তুলে দেন এই দম্পতি। এর আগে করোনাকালে চিকিৎসার জন্য জমানো পুরো ১ লাখ টাকা কর্মহীন অসহায়দের মাঝে বিলিয়ে এবং নিজেদের বাড়ি নির্মাণের জন্য কেনা ইট বিক্রি করে সেসময় ইফতারসামগ্রী বিতরণ করে আলোচিত হয়েছিলেন এই দম্পতি। শিরিন-জিয়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লার মালঞ্চি রেলগেট এলাকায় রেলের পরিত্যক্ত জমিতে বসবাস করেন। পেশায় স্বামী জিয়াউর রহমান ঠিকাদারীর সহযোগী এবং শিরিন আক্তার আনসার-ভিডিপির পৌর ওয়ার্ড লিডার।
শিরিন জানান, তার স্বামী জিয়াউর রহমান মঙ্গলবার সকালে বাড়ি সংলগ্ন রেল লাইনের ধারের লেবু বাগানে একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পান। সেই ব্যাগে নগদ সাড়ে ৮ হাজার টাকা, বেশ কয়েকটি নতুন পোশাকসহ ব্যবহারের বিভিন্ন সামগ্রী ছিল। এসব মালামাল মালিককে ফেরত দেওয়ার চিন্তা থেকে তারা ব্যাগের মালিককে খুঁজতে শুরু করেন। ব্যাগের ভেতরে থাকা নষ্ট মোবাইলের সিমকার্ডের সূত্রধরে তারা ব্যাগের মালিক মো. শাকিলের সন্ধান পান। শাকিল রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে। পরদিন বুধবার সকালে দুই বন্ধুসহ ব্যাগের মালিক তার বাড়িতে এলে ব্যাগের ভেতরের মানিব্যাগে থাকা ছবি দেখে মালিককের পরিচয় নিশ্চিত হন এবং পুলিশের অনুমতিতে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে টাকাসহ মালামাল তুলে দেন।
ব্যাগের মালিক মো. শাকিল জানান, তিনি ঢাকার মতিঝিলে একটি ছাপাখানায় কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ির সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক কিনে গত ৯ এপ্রিল লালমনি একপ্রেস ট্রেনযোগে রংপুরে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ট্রেনটি বাগাতিপাড়ার ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় হঠাৎ করেই ব্যাগটি ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে বাগাতিপাড়া এলাকায় এসে খুঁজেছেন কিন্তু পাননি। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে শিরিনের ফোন পান। বুধবার সকালে রংপুর থেকে এসে টাকাসহ ব্যাগের সব মালামাল ফেরত পান। এজন্যে তিনি শিরিন-জিয়া দম্পতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় তাদের হাতে উপহার হিসেবে অর্থ তুলে দিতে চাইলে এই দম্পতি তা গ্রহন করেননি। শাকিলে সঙ্গে আসা বন্ধু গনমাধ্যমকর্মী সাকিব জানান, কুড়িয়ে পাওয়া টাকাসহ পোশাকভর্তি ব্যাগ ফেরত দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন শিরিন-জিয়া দম্পতি। এমন ঘটনায় তারা ওই দম্পতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, শিরিন আক্তার দীর্ঘদিন থেকে হার্ট, কিডনি এবং মেরুদÐের অসুখে ভুগছেন। ভারতে নিয়মিত চিকিৎসা নেন। ব্যক্তিগত জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।