সংবাদ শৈলী রিপোর্ট
বিএনপির মহাসমাবেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলায় নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও ছয় বছর বয়সের এক মেয়েসহ বাড়ির লোকজন নির্বাক হয়ে পড়েছেন। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তার পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। তাদের কান্না ও আহাজারিতে যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
নিহত পারভেজের বাড়ি নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়নের ফয়েজপুর গ্রামে।
তার বাবা সেকান্দার মোল্লা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
নিহত পারভেজ ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট থেকে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন (সিটিআই) ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার বোলদার ইউনিয়নে বিয়ে করেন।
সংসারে ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। নয়াপল্টনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলায় নিহত হন তিনি।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পারভেজের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে পারভেজের ছোট্ট মেয়ে। ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পারভেজের একমাত্র বোন শেফালী আক্তার।
পারভেজের ছোট ভাই আজিজুল হক বিপ্লব বলেন, ‘ভাইয়ের এই মৃত্যৃ কিভাবে সই। বৃদ্ধ বাবা-মা কিভাবে মেনে নেবেন ছেলের এমন মৃত্যু। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর মা শোনার পর থেকেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছেন।’
তিনি বলেন, আমাদের বাড়ি ছিল মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী গ্রামে। নদীভাঙনে বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাওয়ার পর নাগরপুরে এসে বাড়ি করেছি।
ভাই বিয়ের পর ভাই ঢাকায় স্ত্রী রুমা আক্তার ও মেয়ে তানহাকে নিয়ে শাজাহানপুরের একটি ভাড়াবাসায় থাকতেন। ছুটি পেলেই স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে বাড়ি আসতেন। এখন আর ভাই আসবেন না। এটা ভাবতেই পারছি না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে এভাবে মানুষকে পিটিয়ে মারে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ। এ কেমন আন্দোলন, যে আন্দোলনে মানুষ মারা যায়। এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।