আজ মহান বিজয় দিবস। জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জনের দিন। অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতির গৌরব, অহঙ্কার ও আনন্দ উজ্জ্বলতার সাক্ষ্য বহনকারী কাঙ্খিত বিজয় অর্জনের দিন। ২৫ শে মার্চ পাক বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যা এবং তৎকালীন সরকারের শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি ।দীর্ঘ ৯মাস ব্যাপী বাঙ্গালী বীর জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন ।অবশেষে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ আত্ম সমর্পনে বাধ্য হয়। সমাপপ্তি ঘটে মুক্তিযুদ্ধের। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
কিন্তু এই স্বাদীণতা অর্জন এত সহজতর ছিল। ৩০ লাখ বাঙালির বুকের শোনিত রক্তে, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও অগণিত মানুষের সীমাহীন দুঃখ-দুর্ভোগের বিনিময়ে বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বিজয় দিবস অর্জন করে বাংলাদেশ।
১৯৪৭ সালের পর থেকে বাঙ্গালী জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় শোষণ , নিপিড়ন ও নির্যাতন। বাঙ্গালী জাতির সীমাাহীন এই নিপড়ন নির্যাতন শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৎকালীন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রুখে দাড়ান বাংলার মানুষ । এরই ধারাবহিকতায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ,১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় মহান বিজয় দিবস। কিন্তু ৫৩ বছরেও একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা আইনের শাসন দুর্নীতি মুক্ত জাতি গঠনে ব্যর্থ হয় সরকারগুলো ।ফলে স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে ।বিভিন্ন সময়ে গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। সর্বশেষ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে ৫ই আগস্ট। এদিন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন ।এখন রাষ্ট্র বিনির্মাণের কথা বলা হচ্ছে ।ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সংস্কার মূলক কর্মকাণ্ড শুরু করা হয়েছে। আমরা আশা করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে একটি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা ,আইনের শাসন এবং অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হবে ।বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটবে ।স্বাধীনতা আমাদের চেতনা ,স্বাধীনতা আমাদের গৌরব ।স্বাধীনতা আমাদের জাতিসত্ত্বা। সেই জাতিজাতিসত্ত্বার বিকাশে আসুন সবাই মিলে একটি “নতুন বাংলাদেশ “গড়ে তুলি।